নীল বোতাম

‘নীল বোতাম’ বা ‘Blue Button’ উজ্জ্বল নীল রং এর সামুদ্রিক প্রাণী। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে দেখা মেলে হাইড্রোজোয়া প্রজাতির এই প্রাণীর। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পাঁচ প্রজাতির হাইড্রোজোয়াসহ ২১ প্রজাতির নিডারিয়া পর্বের প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গেছে। নীল বোতাম হাইড্রোজোয়া প্রজাতির প্রাণী। দক্ষিণ-পশ্চিম তীব্র মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা বৃদ্ধির সঙ্গে এই প্রাণীর উপস্থিতির সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। বেশি সংখ্যায় এই প্রাণীর উপস্থিতি সামুদ্রিক খাদ্যচক্র ও জলজ জীববৈচিত্র্য প্রভাবিত করতে পারে। বিশ্বসমুদ্রের নানা অংশে হাইড্রোজোয়া শ্রেণির, বিশেষ করে ভাসমান জেলিফিশ প্রজাতির প্রাণীর আধিক্য আগের চেয়ে অনেক বেশি দেখা যায়।
নীল বোতাম প্রাণী বিশ্বে প্রথম কখন কোথায় দেখা যায়, সে-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে ১৯০৪ সালে পানামা উপকূলে এ প্রাণী দেখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যায় ১৯৬৫ সালে। ভারতের তামিলনাড়ুর উপকূলে ২০১৩ সালে এ প্রাণীর উপস্থিতি শনাক্ত হয়। আর বাংলাদেশে সন্ধান মেলে ২০১৪ সালে। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ড, জাপান ও চীনের উপকূলে এ প্রাণী দেখা যায়। প্রাণীটি বোতাম আকৃতির গোলাকার ডিস্ক সদৃশ অ্যাবোরাল অংশ ও অসংখ্য ঝুলন্ত টেন্টাকল এবং পলিপ সমৃদ্ধ ওরাল অংশের সমন্বয়ে গঠিত। অ্যাবোরাল অংশের উপরিভাগ বাতাস ধারণে সক্ষম অসংখ্য কাইটিনাস টিউব দ্বারা গঠিত। যার পরিধি ১৬ মিমি পর্যন্ত হতে পারে। এই অংশের সাহায্যে প্রাণীটি সমুদ্রের পানির উপরিভাগে ভেসে বেড়ায়। এই প্রাণীর উপরিভাগ এবং ঝুলন্ত পলিপের মধ্যবর্তী স্থানটি সিনোসার্ক (Coenosarc) নামে পরিচিত। যা মেসোগ্লিয়া (Masoglea) দিয়ে গঠিত। এই প্রাণীটি কোপিপোড (প্রাণিজ খাদ্যকণা) এবং নানা সন্ধিপদী প্রাণীর লার্ভি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে, যা অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্যসংকট ঘটিয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অধিক সংখ্যায় এই প্রাণীর উপস্থিতি সামুদ্রিক খাদ্যচক্রকেও প্রভাবিত করতে পারে।

সূত্র: প্রথম আলো
Posted by — Friday, September 23, 2016

Belum ada komentar untuk "নীল বোতাম"

Tambahkan komentar anda :

Advertisement